১৫ হাজার টাকায় সেরা ৩টি এন্ড্রয়েড ফোন [Value for money]

Home » Blog  »  ১৫ হাজার টাকায় সেরা ৩টি এন্ড্রয়েড ফোন [Value for money]
১৫ হাজার টাকায় সেরা ৩টি এন্ড্রয়েড ফোন [Value for money]

আসসালামু আলাইকুম

আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আপনাদের মাঝে আবারো চলে আসলাম নতুন একটি আর্টিকেল নিয়ে। আজকের পোস্টে আমি আপনাদের সাথে ১৫ হাজার টাকার আশে-পাশের ৩ টা মোবাইল ফোনের রিভিউ শেয়ার করবো। আর এই সব গুলো ফোনই হবে আন অফিসিয়াল ফোন।

 

১৫ হাজার টাকার বেস্ট ৩ টি আন অফিসিয়াল ফোন

আপনারা জানেন আন অফিসিয়াল ফোনের দাম কিন্তু অফিসিয়াল ফোনের তুলনায় একটু কমই হয়। তো দেখা যাবে যে ফোনে আন অফিসিয়াল মূল্য ১৫ হাজার টাকা, সেটা অফিসিয়ালি ভাবে কিনতে গেলে গুনতে হবে ১৮ হাজার কিংবা তার থেকে বেশি টাকা।

তাই যারা টাকা সাশ্রয় করতে আন অফিসিয়ালি ফোন কিনতে চাচ্ছেন আর তাদের বাজেট যদি হয় ১৫ হাজার টাকার আশেপাশে তাহলে আজকের এই পোস্ট টি তাদের জন্যই। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে আমরা মেইন টপিকে ফোকাস দেই।

 

Moto G24 Power

এই ফোনটি মোটরোলা কোম্পানির একটি ফোন। আপনার বাজেট যদি একেবারে ১৩ হাজারের কাছা-কাছি হয় তাহলে এই ফোনটি আপনি চয়েজ করতে পারেন। বাজেট অনুযায়ী অন্যন্য অনেক কোম্পানির ফোন থেকে আপনাকে এটা বেস্ট পারফর্মেন্স দিবে। কেননা বাজেট অনুযায়ী একটি ভালো প্রসেসর, বড় ব্যাটারি পাবেন এই ফোনে।

পারফর্ম্যান্স

প্রথমেই কথা বলি এই ফোনের পারফর্ম্যানন্স নিয়ে। এই ফোনে আপনারা পাচ্ছেন MediaTec Helio G85. এটা খুবই ডিসেন্ট একটি প্রসেসর। যা এই বাজেটের দিক থেকে ভালো একটা পারফর্ম্যান্স দিবে। যদি কম্পেয়ার করি এটাকে MediaTec Helio G88 এর সাথে তাহলে G85 কিছু দিকে পিছিয়ে থাকলেও ১৩ হাজার টাকার আশে আশের অন্যান্য ফোনের Unisoc T616 প্রসেসরের থেকে Helio G85 বেশ কিছু দিক থেকে এগিয়ে থাকবে।

এছাড়া এই ফোনে পাবেন ৮/১২৮ জিবি স্টোরেজ। যা দিয়ে মূলত একসাথে ৪-৫ টি এপ্লিকেশন নিয়ে কাজ করতে পারবেন। খুব একটা এপ ক্র‍্যাশ হবে না। যদি গেমিং এর কথা বলেন, তাহলে ভাই Helio G85 কোনো গেমিং প্রসেসর না। তার পরেও লো গ্রাফিক্স এ পাবজি খেলতে পারবেন, আর ফ্রি ফায়ার পাবজির থেকে কিছুটা বেটার পারফর্ম্যান্স দিবে। আর যদি অন্যান্য টুক-টাক গেমিং এর কথা চিন্তা করে এই ফোন কিনেন তাহলে এটা আপনাকে ভালো রেজাল্ট দিবে।

 

ডিসপ্লে

এই ফোনের একমাত্র কমতির যায়গা হলো এর ডিসপ্লে। এখানে ডিসপ্লে হিসাবে HD+ IPS LCD প্যানেল রয়েছে। যদি ফুল HD+ হতো তাহলে কোনো সন্দেহ ছাড়াই এই বাজেটের রাজা এই ফোনই হতো। তবে তারা আবার পান্স হোল কাট-আউট ও ৯০ হার্জ রিফ্রেশরেট দিয়ে ডিসপ্লে সেকশন কে পুশিয়ে দেওয়ার ট্রাই করেছে। এই ডিসপ্লের সাইজ ৬.৫৬ ইঞ্চি এবং ppi ডেনসিটি ২৬৯।

 

ক্যামেরা

এই ফোনের রেয়ারে ডাবল ক্যামেরা সেট আপ পাবেন। ৫০ মেগাপিক্সেল এর মেইন ক্যামেরার পাশাপাশি ২ মেগাপিক্সেলের একটি ম্যাক্রো শুটার থাকবে। আর ফ্রন্ট ক্যামেরা হিসাবে রয়েছে ১৬ মেগাপিক্সেল এর একটি ক্যামেরা। যদি বাজেট অনুযায়ী বিবেচনা করেন তাহলে এই বাজেটের অনেক ফোন থেকে এই ফোনের ক্যামেরা এগিয়ে থাকবে। আবার বেশ কিছু ফোন থেকে হয়তো পিছিয়েও থাকবে। মূল কথা আপনাকে বাজেট অনুযায়ী একটা ব্যালান্স রেজাল্ট দিবে।

 

ব্যাটারি

এই ফোনের ব্যাটারি হিসেবে থাকছে 6000 mAh এর একটি বড় ব্যাটারি। আর চার্জিং এর জন্য রয়েছে ৩৩ ওয়াটের একটি চার্জার। বড় ব্যাটারি হওয়ার জন্য একবার চার্জ করে নিলে গেমিং না করলে এভারেজ দেড়-দুইদিন ইউজ করতে পারবেন। আর গেমিং করলেও একদিন অনায়াসে চলে যাবে।

 

মূল্য

এই ফোনটি আন অফিসিয়াল ভাবে ৮/১২৮ জিবি স্টোরেজ ভার্সনের দাম ১৩০০০ টাকা। আর এটি একটি ভার্সনেই বাংলাদেশে পাওয়া যায়।

 

Redmi 11 Prime

এবার আপনাদের বাজেট যদি আগের বাজেয়াতের তুলনায় একটু বাড়াতে পারেন তাহলে কিন্তু বাজেট ফ্রেন্ডলি ফোন গুলোর মধ্য হাইপে থাকা একটি ফোন কিনতে পারবেন। কথা বলছিলাম Redmi 11 prime নিয়ে। যদি আপনার বাজেট একদম ১৫ হাজার টাকায় ফিক্সড হয় তাহলে ভাই, এই ফোনটি আপনি চয়েজ করতেই পারেন।

পারফরম্যান্স

এই ফোনটির সব থেকে আকর্ষণীয় দিকই হলো এর পারফরম্যান্স সেকশন। কেননা এতে রয়েছে MediaTec Helio G99 প্রসেসর। আপনারা জানেন হয়তো এখন ২৫-২৬ হাজার টাকার ফোনেও এই প্রসেসর থাকে। তাই মাত্র ১৫ হাজার টাকার ফোনে এই প্রসেসর রয়েছে মানে কিন্তু গেমিং এর দিক থেকে মোটামুটি একটা ভালোই পারফর্ম পাওয়া যাবে। যদি এটাকে কম্পেয়ার করি Snapdragon 695 এর সাথে তাহলে বলা যায় দুটোর পারফর্ম্যান্স প্রায় সেমই।

 

ক্যামেরা

যদি এই ফোনের ক্যামেরা নিয়ে কথা বলি তাহলে এর রেয়ারে ৩ টা ক্যামেরা রয়েছে। ৫০ মেগাপিক্সেলের মেইন ক্যামেরার পাশাপাশি ২ মেগাপিক্সেল এর ১ টি ডেপথ ও ১ টি ম্যাক্রো শুটার পাবেন। আর ফন্ট ক্যামেরা হিসেবে ৮ মেগাপিক্সেল এর। ক্যামেরা রেজাল্ট এর কথা বললে আগের ফোনের মতো প্রায় সেইম রেজুলেশনই পাবেন। তবে একটু হলেও আগেরটা থেকে একটু বেটার রেজাল্ট পাবেন।

 

ডিসপ্লে

এই ফোনটাতেও কমতির যায়গাটা সেই ডিসপ্লে সেকশনই। না এবার তারা কোনো HD+ ডিসপ্লে না দিয়ে ফুল HD+ ডিসপ্লে দেওয়া হয়েছে। ৯০ হার্জ হাই রিফ্রেসরেট এর পাশাপাশি একে প্রটেক্ট করছে কর্নিং গোরিলা গ্লাস ৩। তবে এর কমতির যায়গা হলো এতে পান্সহোল কাট আউট না দিয়ে ওয়াটার ড্রপ নচ দেওয়া হয়েছে। যেটা এই সময়ে ততটা মানানসই না। তারপরেও এটাকে যদি কনসিডার করতে পারেন তাহলে এই প্রাইসে বেস্ট ডিল এটাই।

 

ব্যাটারি ও মূল্য

ব্যাটারি হিসেবে পাবেন 5000 mAh এর। এবং একে চার্জ করার জন্য ১৮ ওয়াটের চার্জার পাবেন। এবার যদি এর মূল্যর কথা বলি, তাহলে ৪/৬৪ জিবি ভ্যারিয়েন্ট এর দাম ১৩০০০ হাজার টাকা ও ৬/১২৮ জিবি ভ্যারিয়েন্টের দাম ১৫০০০ টাকা।

 

Realme 10

Redmi ফোনের Miui নিয়ে একটু ঝামেলা থাকেই সাধারণত। তাই অনেকেই Redmi এর উপর ততটা ভরসা করতে পারে না। তবে আপনি যদি Realme এর উপর ভরসা রাখতে পারেন তাহলে অলমোস্ট সেইম প্রাইসে ভালো একটা ডিল পাবেন।

ডিসপ্লে

এই ফোনের ডিসপ্লে হিসেবে থাকছে সুপার এমোলেড প্যানেল, ৯০ হার্জ হাই রিফ্রেসরেট ও ফুল HD+ রেজুলেশন। উপরের ২ টা ফোনের থেকেও বেস্ট একটা ডিসপ্লে। আর এই বাজেটে এমন সুপার এমোলেড আপনাকে হাতে গোনা কয়েকটি ফোন ছাড়া আর কেউ দিবে না। আবার এর ফন্ট ক্যামেরা পান্সহোল কাটআউটের আর এটা মাঝখানে না দিয়ে ফোনের উপরের বাম দিকে দেওয়া আছে। আবার এটাকে কর্নিং গোরিলা গ্লাস ৫ দিয়ে প্রটেক্ট করা হয়েছে। আবার এর ব্রাইটনেস ও কালার প্রেজেন্টেশন ও এগিয়ে আছে।

 

পারফরম্যান্স

এই ফোনেও রয়েছে Mediatec Helio G99 প্রসেসর। এটা নিয়ে তো উপরে কথা বললামই, আশা করছি আর বেশি কিছু এটা নিয়ে বলা লাগবে না। তবে এই ফোনের কমতির যায়গা এবার রয়েছে এই সেকশনেই। কেননা এটাকে আপনারা ৪/৬৪ জিবি ভ্যারিয়েন্টে পাবেন। আর বাজেট যদি ২০ হাজার হয় তবেই এটার ৮/১২৮ জিবি ভ্যারিয়েন্ট নিতে পারবেন।

 

ক্যামেরা

এর রেয়ারে মেইন ক্যামেরা ৫০ মেগাপিক্সেল ও ২ মেগাপিক্সেল এর একটি ডেপথ সেন্সর রয়েছে আর ফ্রন্ট ক্যামেরা ১৬ মেগাপিক্সেল। যদি রেজাল্টের কথা বলি তাহলে উপরের দুইটা ফোন থেকে বেশ এগিয়ে থাকবে এর রেজাল্ট।

 

ব্যাটারি ও মূল্য

ব্যাটারি হিসেবে পাবেন 5000 mAh এর। এবং একে চার্জ করার জন্য ৩৩ ওয়াটের চার্জার পাবেন। এবার যদি এর মূল্যর কথা বলি, তাহলে ৪/৬৪ জিবি ভ্যারিয়েন্ট এর দাম ১৫০০০ হাজার টাকা ও ৮/১২৮ জিবি ভ্যারিয়েন্টের দাম ২০০০০ টাকা।

 

শেষ কথা

তো এই ছিলো আজকের টপিক। আশা করবো আপনাদের কাছে পোস্টটি ভালো লাগবে। আর হ্যাঁ, আপনি যদি এই ফোন গুলো থেকে কোনোটি ব্যবহার করে থাকেন তাহলে সেটার কেমন রেজাল্ট পেয়েছেন তার ভালো-মন্দ দিক গুলো কমেন্ট করে জানান।

কেননা আমি তো রিভিউ দিয়েছি শুধুমাত্র ফোনের কাগজে কলমে যা লেখা স্পেসিফিক দেওয়া ছিলো তার উপর ভিত্তি করে। এখন আপনি যদি সেটা ইউজ করে থাকেন তাহলে নিশ্চয় আরো ভালো বা মন্দ দিক পেয়েছেন। তাহলে সেটা কমেন্ট করে জানান। এতে যারা সেই ফোন কেনার চিন্তা ভাবনা করছে তাদের অনেকটা সুবিধা হবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Thank's for visiting me!

X